Tuesday 30 August 2016

ফুটবলকে ধ্বংস করছে ময়দানের অশুভ সিন্ডিকেটা - মিস্টার এক্স

তোলাবাজি বন্ধের জন্য রাজ্য সরকার কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। সিন্ডিকেটের নামে তোলাবাজি করলে গারদে পুরছে পুলিশ। কিন্তু তোলাবাজি তো শুধু সিন্ডিকেটে হয় না। অন্যত্রও হয়। আমাদের ময়দানে কয়েক বছর ধরে তোলাবাজির কারবার চালু হয়েছে। সেই তোলাবাজদের জেলে পোরা হোক।
তোলাবাজি মানে হল ঘুষ। ঘুষ মানে তোলার বিনিময়ে ঘুষদাতাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়। কে ঘুষ দেয়? যে অপরাধী সে অপরাধ ঢাকার জন্য দেয়। অথবা আগামী দিনে আরও অপরাধ করার জন্য ঘুষ দেয়। এছাড়াও যে মনেপ্রাণে দুর্বল, যে জানে ঘুষ না দিলে কোনও কাজে সফল হতে পারবে না সে ঘুষ দেয়।

Thursday 4 August 2016

রাজ্যের নাম বদলাচ্ছে, এবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের নাম বদলানো হোক

মহম্মদ আলির আসল নাম ছিল ক্যাসিয়াস ক্লে। সেই নাম তিনি বদলে ফেলেছিলেন। কারণ আমেরিকার দাস-মালিকরা তার পূর্বপুরুষদের ক্লে পদবী দিয়েছিলেন। আলি চাননি তাঁর নামে দাসত্বের চিহ্ন থাকুক।
কলকাতার বিবাদি বাগের আসল নাম ছিল ডালহৌসি স্কোয়ার। স্বাধীনতার পর সেই নাম বদলানো হয়। কারণ ডালহৌসি ছিলেন সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজ। একইভাবে কার্জন পার্ক, ওয়েলিংটন স্কোয়ারের নামও  বদলানো হয়েছে।  এই নিয়ম মেনে, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবটির নামও বদলানো উচিত। 

Tuesday 19 July 2016

সন্ধেবেলায় লোটার ডেরায় | মোহন সরদার

সেদিন বিকেলে হাওড়া স্টেশনে যেতে হয়েছিল, এক আত্মীয়কে বিদায় জানাতে। আমার সঙ্গে ছিল আমার এক বন্ধু এবং তার ভাগ্নে। ভাগ্নের বয়স ১২-১৩ বছর। বাড়ি উত্তরবঙ্গে। মামারবাড়ি বেড়াতে এসেছে। সে বলল, “মামা আমি কোনোদিন গঙ্গায় লঞ্চে চড়িনি। চড়ব।“ 
ছেলেমানুষের আবদার শুনতে হয়। তাকে নিয়ে লঞ্চে চেপে হাওড়া থেকে বাবুঘাটে এলাম। তারপর তিনজন হাঁটতে হাঁটতে, ধর্মতলার দিকে আসছি। মোহনবাগান তাঁবুর কাছে এসে বললাম, “এই দ্যাখ এটা জাতীয় ক্লাবের তাঁবু। প্রণাম কর।” 
ছেলেটা মুখ ভোঁতা করে বলল, “রাখো তোমার জাতীয় কেলাব। আমি ইস্টবেঙ্গলের সাপোর্টার। আমাদের তাঁবুটা কোথায় দেখাও।” আমার বন্ধু বলল, “আর বলিস না, আমার দিদির বাপের বাড়ি লোটা। ভাগ্নেটাও লোটা তৈরি হয়েছে।” ভাগ্নে বলল, “অত কথা বুঝি না। ইস্টবেঙ্গল দেখাবে কি না বল?”
আমি বললাম, “দেখবি কী করে? আমাদের ক্লাব বড় রাস্তার উপরে তাই সবাই দেখতে পায়। তোদের ক্লাব তো গলির ভিতরে।” ভাগ্নে তবু বলে “দেখব। গলির ভিতরে গিয়েই দেখব।” আমি বললাম “দ্যাখ, আমার তো একটা মানসম্মান আছে। যদি কেউ দেখে ফেলে যে ইস্টবেঙ্গলে যাচ্ছি, তখন সবাই প্যাঁক দেবে।”
ভাগ্নে বলল, “এখন তো প্রায় সন্ধ্যে হয়ে এসেছে। এখন গেলে কেউ তোমাকে দেখতে পাবে না।” ভেবে দেখলাম, বাচ্চা ছেলে এত করে বলছে। যাই নিয়ে যাই। কেলাব দেখে ভাগ্নে তো মহাখুশি। চোখ বড়বড় করে দেখছে। কিন্তু ফোর্ট উইলিয়ামের দিকে কয়েক পা যেতেই যে কাণ্ড হল, তা আর কহতব্য নয়।
আশপাশের গাছগাছালি থেকে দুজন মহিলা বেরিয়ে এল। তাদের মুখে চড়া মেকআপ। ফিনফিনে শাড়ি। হাতকাটা ব্লাউজ। মাথায় ফিতে। শাড়ি নাভির একহাত নীচে নামানো। একজন বলল, “কোথায় যাচ্ছিস রে?” ভাগ্নে বলল, “ইস্টবেঙ্গল ক্লাব দেখতে।” শুনে সেই মহিলা হেসে গড়িয়ে পড়ল। অন্যজন বলল, “চলে যা বলছি। চলে যা। সন্ধ্যের সময় এই তল্লাটে এসেছিস একটা বাচ্চা ছেলেকে নিয়ে?” আমরা আমতা আমতা করে বললাম, “জানতাম না।” প্রথম মহিলা বলল, “এসেছে যখন কিছু খিঁচে নাও না।” দ্বিতীয়জন বলল “সঙ্গে বাচ্চা আছে ছেড়ে দে।”
ভাগ্নেকে পইপই করে বলেছিলাম, বাড়ি ফিরে কাউকে কিছু বলবি না। কিন্তু ছেলেমানুষ, চেপে রাখতে পারেনি। তাই বেজায় মুখঝামটা শুনতে হল। সবাই বলল, “তোরা জানিস না, সন্ধ্যের সময় ওই এলাকায় কী কী কারবার হয়?”
তোমাদের কারোর যদি এই গল্প বিশ্বাস না হয়, যে কোনোদিন সন্ধেবেলায় বেলায় লোটা কেলাবের কাছাকাছি ঘুরঘুর করে দেখো। তবে গেলে নিজের রিস্কে যাবে। আমাদের সঙ্গে বাচ্চা ছিল বলে ছেড়ে দিয়েছে। অন্যদের কোনও বিপদ হলে আমি দায়ী নই।

Wednesday 13 July 2016

ইস্টবেঙ্গল না টুকলি-বেঙ্গল?

যারা মহান, যারা বড় তাঁদের অন্যরা অনুসরন করে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনুসরণ করতে গেলে একটা দম থাকা চাই। দম না থাকলে সেটা হয়ে যায় নকল, টুকলি। ইস্টবেঙ্গলের খুব সাধ মোহনবাগানকে অনুসরণ করবে। কিন্তু দম না থাকলে যা হয়। হয়ে যায় টুকলি। কখনও আবার সেটাও হয় না। 
কলকাতা ময়দানে কিছু নির্মাণ করতে গেলে সেনাবাহিনীর অনুমতি লাগে। মোহনবাগান যখন কংক্রিটের গ্যালারি নির্মাণ করে তখন সেনাবাহিনী অনুমতি দিয়েছিল। তাই দেখাদেখি লোটারাও চেষ্টা করছে কংক্রিটের গ্যালারি বানাতে। কিন্তু দম থাকলে তো? সেনাবাহিনী মোহনবাগানকে যে অনুমতি দিয়েছে, এলিতেলি ক্লাবকে তা দেবে কেন?
একই কথা প্রযোজ্য ফ্লাডলাইটের ক্ষেত্রে। মোহনবাগানে ফ্লাডলাইট বসল, খারাপ হল, রাজ্য সরকারের সাহায্যে আবার বসল। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের মাঠে একটা টুনি বাল্বও জ্বলল না। রাজ্য সরকারের টাকা পড়ে আছে। আরে বসাবে কী করে? সেনার অনুমতি লাগবে না? আছে সেই দম?
মোহনবাগানের সামনের রাস্তাটা দেখুন গোষ্ঠ পালের নামে। মোহনবাগানের গোষ্ঠ পাল। ইস্টবেঙ্গলের সামনের রাস্তা লেসলি ক্লডিয়াসের নামে। তিনিও মহান খেলোয়াড়। কিন্তু কেউ কি বলে ইস্টবেঙ্গলের লেসলি ক্লডিয়াস? বলে না। আরে টুকলি করে কি সব হয়?
যেমন ক্লাব তেমনই তার সমর্থকরা। হঠাৎ দেখতে পাচ্ছি, লোটাদের প্রতীক হিসাবে সিংহকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটাও টুকলির লক্ষণ। মোহনবাগানের ম্যাসকট বাঘ। জাতীয় ক্লাবের ম্যাসকট জাতীয় পশু। ের পাল্টা লোটারা সিংহকে বেছে নিয়েছে। আচ্ছা, বাংলায় কি সিংহ পাওয়া যায়? তাহলে বাঙলার ক্লাবের ম্যাসকট কী করে সিংহ হবে?  আসলে আমাদের দেখাদেখি টুকলিবাজদের মনে হয়েছে একটা ম্যাসকট চাই। সেটা সিংহ, ভালুক, গাধা, বাঁদর যা হোক হলেই হল।
এবার আসুন কর্তাদের কথায়। মোহনবাগান ঐতিহাসিক শিল্ড জিতেছিল ২৯ জুলাই। তাই ওইদিন মোহনবাগান দিবস পালন করা হয়। তাই দেখাদেখি লোটারাও ভাবল ইস্টবেঙ্গল দিবস পালন করবে। কিন্তু বুদ্ধির এমন আকাল যে বেছে নিল পল্টু দাসের জন্মদিনকে। এর থেকেই বোঝা যায়, ২৯ জুলাইয়ের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মত কোনও ঐতিহাসিক দিন ওদের স্টকে নেই। 
এবার আশা যাক, মোহনবাগান রত্নের প্রসঙ্গে। মোহনবাগানের দেখাদেখি লোটারাও ঠিক করল প্রাক্তনদের সম্মান দেবে। ইস্টবেঙ্গলরত্ন নাম দিলে টুকলি ধরা পড়ে যাবে, তাই নাম দিল ভারতগৌরব। লে হালুয়া! ভারতরত্ন দেয় ভারত সরকার, বঙ্গবিভূষণ দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। লোটারা ইস্টবেঙ্গল-গৌরব পুরস্কার দিতে পারে। কোনও ক্লাব কখনও ভারত গৌরব সম্মান দিতে পারে? এরপর তো বলবে নোবেল পুরস্কার দেব।
আসলে লোটারা জানে, ওদের স্টকে রত্ন, গৌরব এসব খুব বেশি নেই। দিতে গেলে কয়েক বছরের মধ্যেই ফুরিয়ে যাবে। তাই চালাকি করে লেসলি ক্লডিয়াস, বাচেন্দ্রি পাল সবাইকে সম্মান দিচ্ছে। এবার প্রথমে শোনা গেল ইন্দর সিংকে সম্মান জানাবে। শেষমেশ দিল মিলখা সিংকে। এদের দুজনের সাথেই ইস্টবেঙ্গলের কোনও সম্পর্ক নেই। বাচেন্দ্রি পাল ইস্টবেঙ্গলের হয়ে এভারেস্টে উঠতেন না, মিলখা লাল হলুদ জার্সি পরে ছুটতেন না।
এরপর হয়তো শুনব মেসিকে ভারত গৌরব দিয়েছে। ওহ থুড়ি ওদের ক্লাবে তো মেসির থেকেও বড় প্লেয়ার খেলে, ডু ডং হিউন।