যারা মহান, যারা বড় তাঁদের অন্যরা অনুসরন করে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনুসরণ করতে গেলে একটা দম থাকা চাই। দম না থাকলে সেটা হয়ে যায় নকল, টুকলি। ইস্টবেঙ্গলের খুব সাধ মোহনবাগানকে অনুসরণ করবে। কিন্তু দম না থাকলে যা হয়। হয়ে যায় টুকলি। কখনও আবার সেটাও হয় না।
কলকাতা ময়দানে কিছু নির্মাণ করতে গেলে সেনাবাহিনীর অনুমতি লাগে। মোহনবাগান যখন কংক্রিটের গ্যালারি নির্মাণ করে তখন সেনাবাহিনী অনুমতি দিয়েছিল। তাই দেখাদেখি লোটারাও চেষ্টা করছে কংক্রিটের গ্যালারি বানাতে। কিন্তু দম থাকলে তো? সেনাবাহিনী মোহনবাগানকে যে অনুমতি দিয়েছে, এলিতেলি ক্লাবকে তা দেবে কেন?
একই কথা প্রযোজ্য ফ্লাডলাইটের ক্ষেত্রে। মোহনবাগানে ফ্লাডলাইট বসল, খারাপ হল, রাজ্য সরকারের সাহায্যে আবার বসল। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের মাঠে একটা টুনি বাল্বও জ্বলল না। রাজ্য সরকারের টাকা পড়ে আছে। আরে বসাবে কী করে? সেনার অনুমতি লাগবে না? আছে সেই দম?
মোহনবাগানের সামনের রাস্তাটা দেখুন গোষ্ঠ পালের নামে। মোহনবাগানের গোষ্ঠ পাল। ইস্টবেঙ্গলের সামনের রাস্তা লেসলি ক্লডিয়াসের নামে। তিনিও মহান খেলোয়াড়। কিন্তু কেউ কি বলে ইস্টবেঙ্গলের লেসলি ক্লডিয়াস? বলে না। আরে টুকলি করে কি সব হয়?
যেমন ক্লাব তেমনই তার সমর্থকরা। হঠাৎ দেখতে পাচ্ছি, লোটাদের প্রতীক হিসাবে সিংহকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটাও টুকলির লক্ষণ। মোহনবাগানের ম্যাসকট বাঘ। জাতীয় ক্লাবের ম্যাসকট জাতীয় পশু। ের পাল্টা লোটারা সিংহকে বেছে নিয়েছে। আচ্ছা, বাংলায় কি সিংহ পাওয়া যায়? তাহলে বাঙলার ক্লাবের ম্যাসকট কী করে সিংহ হবে? আসলে আমাদের দেখাদেখি টুকলিবাজদের মনে হয়েছে একটা ম্যাসকট চাই। সেটা সিংহ, ভালুক, গাধা, বাঁদর যা হোক হলেই হল।
এবার আসুন কর্তাদের কথায়। মোহনবাগান ঐতিহাসিক শিল্ড জিতেছিল ২৯ জুলাই। তাই ওইদিন মোহনবাগান দিবস পালন করা হয়। তাই দেখাদেখি লোটারাও ভাবল ইস্টবেঙ্গল দিবস পালন করবে। কিন্তু বুদ্ধির এমন আকাল যে বেছে নিল পল্টু দাসের জন্মদিনকে। এর থেকেই বোঝা যায়, ২৯ জুলাইয়ের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মত কোনও ঐতিহাসিক দিন ওদের স্টকে নেই।
এবার আশা যাক, মোহনবাগান রত্নের প্রসঙ্গে। মোহনবাগানের দেখাদেখি লোটারাও ঠিক করল প্রাক্তনদের সম্মান দেবে। ইস্টবেঙ্গলরত্ন নাম দিলে টুকলি ধরা পড়ে যাবে, তাই নাম দিল ভারতগৌরব। লে হালুয়া! ভারতরত্ন দেয় ভারত সরকার, বঙ্গবিভূষণ দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। লোটারা ইস্টবেঙ্গল-গৌরব পুরস্কার দিতে পারে। কোনও ক্লাব কখনও ভারত গৌরব সম্মান দিতে পারে? এরপর তো বলবে নোবেল পুরস্কার দেব।
আসলে লোটারা জানে, ওদের স্টকে রত্ন, গৌরব এসব খুব বেশি নেই। দিতে গেলে কয়েক বছরের মধ্যেই ফুরিয়ে যাবে। তাই চালাকি করে লেসলি ক্লডিয়াস, বাচেন্দ্রি পাল সবাইকে সম্মান দিচ্ছে। এবার প্রথমে শোনা গেল ইন্দর সিংকে সম্মান জানাবে। শেষমেশ দিল মিলখা সিংকে। এদের দুজনের সাথেই ইস্টবেঙ্গলের কোনও সম্পর্ক নেই। বাচেন্দ্রি পাল ইস্টবেঙ্গলের হয়ে এভারেস্টে উঠতেন না, মিলখা লাল হলুদ জার্সি পরে ছুটতেন না।
এরপর হয়তো শুনব মেসিকে ভারত গৌরব দিয়েছে। ওহ থুড়ি ওদের ক্লাবে তো মেসির থেকেও বড় প্লেয়ার খেলে, ডু ডং হিউন।
No comments:
Post a Comment